সমুদ্রে বাংলাদেশি গিটারফিশের নতুন প্রজাতি শনাক্ত

 

বাংলাদেশি গিটারফিশের নতুন একটি প্রজাতি শনাক্ত হয়েছে। সামুদ্রিক এই মাছ দেখতে গিটারের মতো। পুরুষ মাছের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে সাতশ’ মিলিমিটার।

বাংলাদেশি গিটারফিশের নতুন একটি প্রজাতি শনাক্ত হয়েছে। সামুদ্রিক এই মাছ দেখতে গিটারের মতো। পুরুষ মাছের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে সাতশ’ মিলিমিটার। 

 

কক্সবাজারের সৈকতের ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে ২০-৩০ মিটার গভীরে দেখা মেলে এরকম গিটারফিশের।

 

স্থানীয়ভাবে গিটারফিশকে ‘পীতাম্বরি’ নামে চেনা হয়। হাজারবরশি ও দেওন্দি জালে ধরা পড়ে এসব মাছ।

 

তিন ধরনের গিটারফিশ মিলত কক্সবাজারের সৈকতের আশপাশে। বাংলাদেশি গিটারফিশ নিয়ে চার ধরনের প্রজাতি শনাক্ত হল দেশে।

মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী জ্যুট্যাক্সা এ উদ্ভাবন নিয়ে প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।

 

ঢাকার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব নতুন এ সামুদ্রিক মাছের প্রজাতি আবিষ্কারে নেতৃত্ব দেন। তার সহযোগী ছিলেন মো. জায়িদুল ইসলাম।

 

আহসান হাবীব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দুই বছর ধরে গবেষণার পর নতুন প্রজাতিটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত নিয়ে গবেষণা প্রবন্ধটি বিজ্ঞান জার্নালে স্থানও পেয়েছে।

 

 

এটাকে ‘বেশ বড় অর্জন’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

 

ড. আহসান জানান, গ্লুকোসটেগিডি পরিবারের প্রজাতিগুলোকে জায়ান্ট গিটারফিশ বলা হয়। পৃথিবীতে এ পর্যন্ত জায়ান্ট গিটারফিশের আটটি প্রজাতি শনাক্ত করা হয়েছে। দুটি প্রজাতি ছাড়া বাকি সব গিটারফিশ সামুদ্রিক লোনা পানিতে বসবাস করে। তবে দুটি প্রজাতি মাঝে মাঝে ঈষৎ লোনা পানিতে আসে।

 

“দেখতে গিটারের মতো হওয়ায় এদেরকে গিটারফিশ বলা হয়।

 

‘বাংলাদেশি গিটারফিশ’ প্রজাতিটি বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় ডিএনএ বারকোডিংয়ের মাধ্যমে হাঙ্গর ও শাপলাপাতা জাতীয় মাছের প্রজাতি শনাক্তরন ও সংরক্ষণ পরিস্থিতি নিয়ে করা একটি গবেষণার সময় পাওয়া যায়; যাতে অর্থায়ন করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।

 

গষেষক জায়িদুল ইসলাম বলেন, “গিটারফিশ কক্সবাজারের অতি পরিচিত মাছ। স্থানীয়রা পীতাম্বরী নামে চেনে। কিন্তু সেখানে কয়েক ধরনের মাছ পেলেও নতুন প্রজাতিটি হয়ত চোখে পড়েনি। ২০১৯ সালে আমরা একটি গবেষণার কাজ করতে গিয়ে নিবিড়ভাবে বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষণ করে নতুন মাছটি শনাক্ত করতে পেরেছি।”

 

তিনি জানান, তিন ধরনের গিটারফিশ পাওয়া যেত কক্সবাজারে। নতুন শনাক্তের পর চার ধরনের মাছ পাওয়া গেল এ প্রজাতির।

 

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেহের গঠন, বাহ্যিক আকৃতি এবং ডিএনএ বারকোডিং পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রজাতিটি শনাক্ত করা হয়। বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় পাওয়া যায় বলে প্রজাতিটির ইংরেজি নাম দেয়া হয়েছে বাংলাদেশি গিটারফিশ।

 

পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর এবং বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য এবং এদের ডিএনএ বারকোডিং গবেষণায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য মাছটির প্রধান উদ্ভাবক অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব তার পিএইচডি সুপারভাইজার কোরিয়ার সমুদ্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইন্সটিট্যুট (কিওস্ট) এর অধ্যাপক ড. ইওনহোলী এর নামে মাছটির বৈজ্ঞানিক নামকরণ করেন গ্লুকোসটেগাস ইওনহোলী (Glaucostegus younholeei)|

 

>> বাংলাদেশি গিটারফিশ (Bangladeshi guitarfish

 

>> মাছটি রাইনোবেটিফরমিস (Rhinopristiformes) বর্গের;

 

>> গ্লুকোসটেগিডি (Glaucostegidae)) পরিবারের;

 

>> গ্লুকোসটেগাস (Glaucostegus) গণের একটি প্রজাতি।

 

ড. আহসান বলেন, “গিটারফিশরা মহাবিপন্ন। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গিটারফিশদের সংরক্ষরণের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সাথে নিয়ে এখনই যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। তা নাহলে গিটারফিশরা খুব বেশি দিন পরিবেশে টিকে থাকবে না।”

 

 

 

 

About rakib

Check Also

দুই উপাদান দূর করবে ঘাড়ের কালো দাগ

অ্যালোভেরা ঘাড়ের কালো দাগ দূর করতে অ্যালোভেরা খুব চমৎকার একটি উপাদান। ‌অ্যালোভেরা ত্বকের উজ্জ্বলতায় বাড়ায়। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *