মহানবী (সা:) বলেছেন:-
দ্বীনি এলেম অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য করস।
রাসূল (সা:) একবার সাহাবায়ে কেরামদের সাথে বসে ছিলেন, এমন সময় তিনি তাদেরকে প্রশ্ন করলেন। তোমরা জানো কি প্রকৃত দরিদ্র কে?
তখন এই প্রশ্নের উত্তরে সাহাবায়ে কেরাম সেই জবাবটাই দিয়েছেন যা আমরা দিয়ে থাকি। তারা বলেছেন আমাদের মধ্যে যার টাকা পয়সা ধন দৌলত নেই সেই হচ্ছে দরিদ্র।
অতঃপর রাসূল (সা:) সাহাবাদের এই ভুল ধারণাকে শুদ্ধ করে দিয়ে বললেন:-
নিশ্চয়ই আমার উম্মতের মধ্যে দরিদ্র হলো সেই ব্যক্তি, যে কিয়ামতের দিন নামাজ,রোজা,যাকাতের সওয়াব নিয়ে হাজির হবে। সাথে সাথে কাউকে গালি দেওয়া,কাউকে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া, কারো মাল অন্যায় ভাবে ভক্ষণ করা, অন্যায় ভাবে কারো রক্ত প্রবাহিত করা, এবং কাউকে অন্যায় ভাবে প্রহার করার গুনাহ নিয়ে উপস্থিত হবে।
ফলে সকল পাওনাদারদের পাওনা তার সওয়াব থেকে পরিশোধ করতে থাকবে। এভাবে পাওনাদার ব্যক্তিদের প্রাপ্য দিতে দিতে যখন তার সওয়াব শেষ হয়ে যাবে। বাকি পাওনাদারদের পাওনা পরিশোধ করার মতো আর কোন সওয়াব তার কাছে বাকি থাকবে না। তখন অন্যদের গুনাহ গুলো তাকে দিয়ে দেওয়া হবে। এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
হে ভাই আমরা অনেকেই নামাজ পড়ি, রোজা রাখি, হজ করি, যাকাত দেয়ই এই নেক আমল গুলো ঠিকমতো ভালোভাবে আদায় করি। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালার হক গুলো ভালোভাবে আদায় করি। কিন্তু মানুষের হক এর ব্যাপারে আমরা উদাসীন থাকি। মানুষের হক গুলো ঠিকমতো আদায় করি না। মানুষের সাথে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভালো আচরণ করিনা। বেখেয়ালে অনেক সময়ই মানুষের সাথে জুলুম করে ফেলি। আমরা তা বুঝতে পারিনা, এবং তা বুঝার ও চেষ্টা করি না।
যেমন যথাযথভাবে শ্রমিকের পারিশ্রমিক বুঝিয়ে দেই না। দুর্বলের প্রতি জুলুম করি। সামান্য কোন কারনে, বাড়ির কাজের লোকটার সাথে খারাপ ব্যবহার করি। তাকে ধমক দেই, গালি দেই, কখনো কখনো চড় থাপ্পর দিয়ে বসি। আরো বড় ধরনের শারীরিক নির্যাতন করে বসি। দোকানের কর্মচারী বা অফিসের পিয়ন এর সাথে খারাপ ব্যবহার করি তাদেরকে সবসময় ধমক দিয়ে কথা বলে গালিগালাজ করি। রিক্সাওয়ালা বা গাড়ির হেলপার এর সাথে খারাপ ব্যবহার করি। তাদেরকে গালি দেয় বা তুই তুকারি করে কথা বলি। এবং তাদেরকে ভাড়া কম দেওয়ার চেষ্টা করি। আর ভাবি তাদের দুই পায়সা কম দিতে পারলেই বুঝি আমি লাভবান হয়ে গেলাম। কখনো তো এমন ও হয়, আমরা যে লোকটার সাথে খারাপ ব্যবহার করছি সে লোকটি আমার চেয়ে অনেক বড়, বাবার সমান অথবা দাদার সমান কিন্তু আমরা তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করছি।
অথচ আমাদের উচিত ছিল তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করা, একটু সহানুভূতি নিয়ে তাদের সাথে কথা বলা। তাদেরকে দুই পয়সা বেশি দেওয়ার চেষ্টা করা। টাকা বেশি দিতে না পারলেও তাদের সাথে একটু মুচকি হেসে কথা বলা। কারণ এই লোকটাই তো তা শরীরের রক্ত পানি করে আমার সেবা করা যাচ্ছে।
হে ভাই আমরা এই ছোটখাটো বিষয় গুলো লক্ষ করিনা। এক রকম মনের অজান্তেই আমরা এই অপরাধগুলো করে ফেলি, এবং প্রতিনিয়ত ও করে যাচ্ছি। আমরা একবারও খেয়াল করি না, যে এই ছোট ছোটা বিষয় যাকে আমি তুচ্ছ মনে করছি হয়তো এই কারণে কেয়ামতের দিন আমাকে অনেক বড় বিপদের সম্মুখীন হাওয়া লাগতে পারে। এর কারণে আমার সারা জীবনের আমল গুলো বরবাদ হয়ে যেতে পারে। এমনকি এ বিষয়গুলো আমাকে জাহান্নাম পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে।
সুতরাং হে ভাই আসুন , আমরা এইসব খারাপ অভ্যাসগুলো পরিহার করি। নববী আদর্শে আমাদের জীবনটা কে সাজাই, এবং দুনিয়া ও আখেরাতে সফলকাম হই, হে আল্লাহ আপনি আমাদের তোফিক দান করুন, আমিন।
সমাপ্ত
- জীবন গড়ার ঐতিহাসিক কথা।
- সেতু নির্মাণে কাঁটা মাথার আসল রহস্য।কুমিল্লা জজ ক
- কুমিল্লার জর্জ কোর্ট এর ভিতর বিচারকের সামনে হত্যা, বিচলিত সারাদেশ।