ধরা যাক, তুমি প্রোগ্রামিং ভালোই পারো। তোমার হয়ত কম্পিউটার সায়েন্সের উপর কোনো ডিগ্রী নেই, কিন্তু তুমি প্রোগ্রামিং ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী। কিংবা ডিগ্রী নিচ্ছ কিন্তু বুঝতে পারছ না যে কিভাবে তুমি তোমার সিভিতে নিজেকে এমনভাবে তুলে ধরতে পারবে যাতে কোম্পানীগুলো বুঝতে পারে যে তুমি আসলেই কাজ জানো। প্রোগ্রামিং ক্যারিয়ারে কাজ করতে পারাটাই আসল, ডিগ্রী না থাকলেও চলে।
কিভাবে নিজের দক্ষতা প্রকাশ করবে?
১) প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন : তুমি যদি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী হও, তাহলে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতাগুলোতে নিয়মিত অংশগ্রহন করতে পারো। এসিএম আইসিপিসি’র ঢাকা রিজিওনাল প্রতিযোগিতায় শীর্ষ দুই বা তিনটি দলের মধ্যে থাকলে তোমার গুগল বা ফেসবুকে ইন্টারভিউ দেওয়ার জোরালো সম্ভাবনা তৈরি হয়। তুমি কম্পিউটার সায়েন্সে পড় নাকি ফিজিক্সে পড়, এটি নিয়ে তাদের মাথাব্যাথা থাকবে না। আরেকটি সুবিধা হবে, দেশের শীর্ষ প্রোগ্রামারদের সাথে তোমার জানাশোনা হবে।
২) প্রোগ্রামিং ব্লগ : তুমি প্রোগ্রামিং বিষয়ক ব্লগ লেখতে পারো। প্রতিদিন প্রোগ্রামিং করতে গিয়ে তুমি যা শেখো, সেগুলো লিখে রাখতে পারো নিজের ভাষায়। কোনো সমস্যায় পড়লে কিভাবে সেই সমস্যার সমাধান করলে, সেটিও লিখে রাখতে পারো। এতে অন্যরা যেমন উপকৃত হবে, তেমনি তোমার একটি পরিচিতি তৈরি হবে এবং সিভিতে তুমি তোমার ব্লগের লিঙ্ক দিয়ে দিবে। এতে যিনি তোমার ইন্টারভিউ নিবেন, তিনি সেটি দেখে তোমার দক্ষতা সম্পর্কে খানিকটা ধারণা পাবেন। কিন্তু খবরদার, নিজের ব্লগে অন্যের লেখা চুরি করবে না।
৩) ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন তৈরি : তুমি নিজে বিভিন্ন ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে সেগুলো ইন্টারনেটে হোস্ট করে রাখতে পারো। আর নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে সবকিছু সাজিয়ে রাখো, এটাকে পোর্টফোলিও (Portfolio) বলে। তুমি কোন লেভেলের ওয়েব ডেভেলাপার, সেটা তোমার পোর্টফোলিওই বলে দেবে।
৪) মোবাইল অ্যাপ : তুমি যদি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করতে পারো, তাহলে নিজে নিজে কিছু আইডিয়া বের করে, বা অন্যের আইডিয়া দেখে কয়েকটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন বানিয়ে ফেলো এবং হোস্ট করে রাখো। আর ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় একটি অ্যান্ড্রয়েড (বা আইফোন, তুমি যেই প্ল্যাটফর্মে কাজ করো) মোবাইল সাথে রাখবে যেখানে তোমার তৈরি অ্যাপগুলো ইনস্টল করা থাকবে।
৫) বিভিন্ন ফোরামে অংশগ্রহন : বিভিন্ন ফোরামে কিংবা গ্রুপে মাঝে-মধ্যে সময় দাও। সেখানে অন্যরা যেসব সমস্যা দিয়ে সাহায্য চেয়েছে, সেগুলো সমাধান করে দাও (ক্লাশের এসাইনমেন্ট করে দিবে না কিন্তু!)। এতে তোমার দক্ষতা যেমন বাড়তে, তেমনি অন্য প্রোগ্রামারদের নজরেও তুমি পড়ে যাবে!
তোমার জন্য শুভকামনা রইল।