ফোন হ্যাক করা আজকের বিষয় নয়। এই নিয়ে বহু প্রমাণ ও অভিযোগ আগে পাওয়া গিয়েছে। তবে সবচেয়ে নতুন বিষয়টি হল পেগাসাস স্পাইওয়্যার Pegasus (spyware)। এটা একটা হ্যাকিং সফটওয়্যার। বিশ্বজুড়ে এর দাপটে ভীত সন্ত্রস্ত সমাজের বড় থেকে মাঝারি ব্যক্তিরা।
পেগাসাস কি..?
পেগাসাস হ’ল ইস্রায়েলি সাইবারার্মস সংস্থা এনএসও গ্রুপ দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা সবচেয়ে শক্তিশালী স্পাইওয়্যার ।
পেগাসাস কিভাবে কাজ করে.?
পেগাসাস স্পাইওয়্যার যা আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েডের বেশিরভাগ সংস্করণে চলমান মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য ডিভাইসে গোপনে ইনস্টল করা যেতে পারে।একটি রিপোর্টে জানা গিয়েছে, এটি একটি শক্তিশালী স্পাইওয়্যার। যার দ্বারা যে কোনও কারও ফোনে ২৪ ঘণ্টা গোপন নজরদারি চালানো যায়।সংশ্লিষ্ট ফোন থেকে পাঠানো মেসেজ, ছবি বা ফোন কলের মধ্যেকার কথোপকথন ব্যবহারকারীর অজান্তেই কপি করে পাচার করার ক্ষমতা রাখে পেগাসাস।
এমনকী ফোনের ক্যামেরা ও স্পিকারের সাহায্য যখন-তখন যে কোনও কিছু রেকর্ড করতে পারে। এছাড়াও ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করার ক্ষমতা রাখে।এর ফলে ফোন সহ ব্যবহারকারী কখন কোথায় যাচ্ছে তা ধরে ফেলা যায়। এক কথায় ফোন সংক্রান্ত ও ব্যক্তিগত যাবতীয় তথ্য ফাঁস হয়ে যায় জনসমক্ষে।
গবেষকরা পেগাসাসের প্রথম ভার্সনটি আবিষ্কার করেছিলেন ২০১৬ সালে।
যে পদ্ধতিতে ফোনগুলিকে হ্যাক করা হয়, তাকে বলা হত স্পিয়ার ফিশিং। এই পদ্ধতিতে ফোনে টেক্সট মেসেজ বা ইমেইলে একটি লিঙ্ক পাঠানো হত।যেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই নির্দিষ্ট ব্যক্তির ফোন পেগাসাসের দখলে আসত। তবে বর্তমানে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে এনএসও গ্রুপের তৈরি এই সফটওয়্যার।
এখন আর ব্যবহারকারীকে কোনও লিঙ্ক পাঠানো হয় না। টার্গেটের অনুমতি ছাড়াই ফোনে নজর রাখতে পারে পেগাসাস স্পাইওয়্যার। এই পদ্ধতিকে বলা হয় জিরো ক্লিক (Zero Click)। যার মানে কোনও লিঙ্কে ক্লিক করার প্রয়োজন পড়ে না আজকাল।
এই স্পাইওয়ার থেকে আপনার মোবাইল ফোনকে কিভাবে সুরক্ষিত রাখবেন চলুন দেখে নেই ৫ টি গোপন টিপস.
১. ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। কারণ ফ্রি ওয়াইফাই এ অনেক ধরনের ম্যালওয়ার থাকে। যা আপনার ফোনকে অনিরাপদ করতে তুলতে পারে এবং সাইবার দুর্বৃত্তরা অনেক সময় ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহারকৃত ফোনকে টার্গেট করে থাকে।
২. ফোনে আড়ি পাতার জন্য অনেক সময় ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন ধরনের লিংক ব্যবহার করে। ফোনে যদি এ ধরনের অপরিচিত সাইটের লিংক আসে তাহলে তাতে প্রবেশ করবেন না।
৩. আপনার ফোন যেন অন্য কেউ ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য সব ধরনের লক চালু করে দিন।
৪. ফোনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলোকে এনক্রিপ্ট করে রাখুন। যাতে ফোন সাইবার হামলার স্বীকার হলেও দুর্বৃত্তরা আপনার তথ্য চুরি করতে না পারে।
৫. এছাড়া ফোনের অ্যাপস আপডেট করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। ফোনের নির্ধারিত ওয়েবসাইট ছাড়া অন্য কোনো ওয়েবসাইট থেকে অ্যাপস আপডেট করবেন না।