প্রিয় ভাই ও বোনেরা আমরা মানুষের কাছে প্রিয় হওয়ার জন্য কত কিছুই না করি, দুনিয়ার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন এর জন্য কত ভাবেই না নিজেকে উপস্থাপনের চেষ্টা করি। কেউ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য কোরআন হাদিসের অপব্যাখ্যা করছে ।কেউ মানুষের কাছে প্রিয় হওয়ার জন্য আল্লাহর বিধানকে গোপন করছে। আল্লাহর শত্রুদের সাথে বন্ধুত্ব করছে। আসলে এভাবে দিনের অপেক্ষা করে কি মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যায়? মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়া যায়।সহিঃ মুসলিম এসেছে। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে।
রাসুল (সা:) বলেছেন:-
আল্লাহ তাআলা যখন কোন বান্দাকে ভালবাসেন, তখন জিবরাঈল (আ:) কে ডেকে আনেন এবং তাকে লক্ষ্য করে বলেন আমি আমার অমুক বান্দা কে ভালবাসি। সুতরাং তুমিও তাকে ভালোবাসো। অতঃপর জিবরাইল (আ:) তাকে ভালোবাসতে শুরু করেন। অতঃপর জিবরাঈল (আ:) আসমানের অধিবাসীদের ডেকে বলেন, আসমানে অবস্থানরত ফেরেশতাদের কে ডেকে বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তার অমুক বান্দাকে ভালবাসেন সুতরাং তোমরাও তাকে ভালোবাসো। অতঃপর আসমানের অধিবাসীরাও তাকে ভালোবাসতে শুরু করে।
প্রিয় ভাই ও বোনেরা আপনারা জানেন কি? এই আসমানে অবস্থান রত ফেরেশতারা কারা? আসমানে অবস্থান রত ফেরেশতা হচ্ছেন তারা, যারা কখনোই আল্লাহর অবাধ্য আচরণ করে না। বরং তারা আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী কার্য সম্পাদন করে থাকে। আল্লাহর অসংখ্য অগণিত ফেরেশতা রয়েছে, যাদের সংখ্যা গণনা করে শেষ করা যাবে না। তাদের মধ্যে থেকে কিছু ফেরেস্তা আরশ বহনের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। কিছু ফেরেস্তা মেঘমালা পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে, কিছু ফেরেস্তা সেজদা অবনত অবস্থায় রয়েছে, কিছু ফেরেস্তা রুকু অবস্থায় রয়েছে। কিছু ফেরেস্তা দন্ডায়মান অবস্থায় আল্লাহর পবিত্রতার মহিমা ঘোষণা করছে।
রাসুল (সা:) বলেছেন
প্রতিদিন 70 হাজার ফেরেস্তা বাইতুল মায়মুর কে তাওয়াফ করে থাকে। যারা একবার তাওয়াফ করে ফেলে, সংখ্যাধিক্যের কারণে তাদের আর কখনোই দ্বিতীয় বার বাইতুল মায়মুর কে তাওয়াফ করার সুযোগ হয় না।
তাহলে বোঝা যাচ্ছে, আল্লাহর আনুগত্য শীল কত অসংখ্য অগণিত ফেরেশতা রয়েছে যাদের সংখ্যা গণনা করে শেষ করা যাবে না।
এই অসংখ্য-অগণিত ফেরেশতাদেরকে জিব্রাইল (আ:) ডাক দিয়ে বলেন
আল্লাহ তাআলা নিশ্চয়ই তার অমুক বান্দা কে ভালবাসেন সুতরাং তোমরাও তাকে ভালোবাসো। জিবরাঈল (আ:)
এর এই ঘোষণার পর। আসমানের ফেরেশতারা তাকে ভালোবাসতে শুরু করে।
রাসুল (সা:) বলেন
অতঃপর আল্লাহ তাআলা ও আসমানের ফেরেশতাদের এই ভালোবাসার ফলে আল্লাহর সেই প্রিয় বান্দা জমিনের মাঝে ও মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে।
রাসুল (সা:) আরো বলেন :-
আল্লাহ তাআলা যখন কোন বান্দাকে ঘৃণা করেন , জিব্রাইল (আ:) কে ডেকে বলেন, হে জিবরাঈল আমি অমুক পাপিষ্ট কে ঘৃণা, করি সুতরাং তুমিও তাকে ঘৃণা করো। অতঃপর জিব্রাইল (আ:) আসমানের অধিবাসীদের ডেকে বলেন নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা অমুক ব্যক্তি কে ঘৃণা করেন, সুতরাং তোমরা তাকে ঘৃণা করো। অতঃপর আসমানে অবস্থানরত সকল ফেরেশতারা তাকে ঘৃণা করতে শুরু করে।
রাসুল (সা:) বলেন:-
অতঃপর আল্লাহ তাআলা ও আসমানের এর ফেরেশতাদের ঘৃণার ফলে, জমিনে তার গ্রহণযোগ্যতা কমতে থাকে, পৃথিবীর মানুষের হৃদয়ে তার ব্যাপারে ঘৃণা ছড়িয়ে পড়ে।
প্রিয় ভাই ও বোন, সুতরাং তুমি যখন আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে চলবে, তখন আল্লাহ তায়ালা তোমাকে ভালোবাসবেন। জিব্রাইল তোমাকে ভালবাসবেন। আসমানে অবস্থানরত সকল ফেরেশতারা তোমাকে ভালবাসবেন।
এই ভালোবাসার ফলে, পৃথিবীর আল্লাহ ভীরু মানুষের কাছে তুমি জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে। তোমার বিরোধীরা, তোমার সমালোচনাকারীরা, হাজারো চেষ্টা করেও তোমার গ্রহণযোগ্যতাকে নষ্ট করতে পারবে না। তোমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
আর তুমি যখন আল্লাহর অবাধ্য চরণ করবে, তখন আল্লাহ তায়ালা তোমাকে ঘৃণা করবেন, জিব্রাইল তোমাকে ঘৃণা করবেন, আসমানে অবস্থানরত সকল ফেরেস্তারা তোমাকে ঘৃণা করবেন। আর এই ঘৃণার ফলে, পৃথিবীর মানুষের অন্তরে তোমার ব্যাপারে ঘৃণা ছড়িয়ে পড়বে, তোমার গ্রহণযোগ্যতা মানুষের মাঝে নষ্ট হয়ে যাবে, হাজারো আয়াত-হাদীস কে বিকৃতি করে, আল্লাহর বিধানকে গোপন করে, মুরতাদ শাসকদের সাথে আঁতাত করে, তুমি জমিনে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পারবে না। কেননা আসমানের অধিপতির পক্ষ থেকে তোমার গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট হয়ে গেছে।
হে আল্লাহ আপনি ভাল করে জানেন , আমি মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা কখনো করিনি, মানুষের কাছে প্রিয় হওয়ার জন্য মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা লাভের জন্য সত্যকে গোপন করিনি। সত্যের সাথে মিথ্যাকে মিস্ত্রি তো করেনি। সব সময় স্পষ্ট ভাষায় তাই বলেছি যা বলার জন্য আপনি আদেশ দিয়েছেন।
হে আল্লাহ আমার সমালোচনাকারীরা কি বলল আমি তা পরোয়া করি না। হে আল্লাহ আমি মনেপ্রাণে এটা বিশ্বাস করি, আমি যদি আপনার
আমি মনেপ্রাণে এটা বিশ্বাস করি, যে আমি যদি আপনার কাছে প্রিয় হতে পারি। আমি যদি আপনাকে সন্তুষ্ট করতে পারি। আমি যদি আপনার ভালোবাসা অর্জন করতে পারি। তাহলে আপনি পৃথিবীর মানুষের হৃদয় আমার প্রতি ভালোবাসা ডেলে দিবেন। যে ভালোবাসাকে, কোন সমালোচনাকারীর সমালোচনা কুলষিত করতে পারবে না।
আর আমি যদি আপনাকে অসন্তুষ্ট করি, তাহলে পৃথিবীর মানুষের হৃদয়ে আপনি আমার প্রতি ঘৃণা ঢেলে দিবেন, শত চেষ্টা করেও শত শত আয়াত হাদিসের অপব্যাখ্যা করে ও আমি মানুষের কাছে প্রিয় হতে পারব না, আমি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারব না।
হে আমার প্রতিপালক, সুতরাং আমি চাই, আপনি আমার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান। আমাকে আপনার সন্তুষ্টির পথে পরিচালনা করুন।
- বিয়ের যাত্রীসহ ট্রেনের নিচে মাইক্রোবাস।
- যেমন কর্ম তেমন ফল।
- জীবন সংকটে মধ্যে। হে আল্লাহ সবাইকে হেদায়েত দান করুন।