ক্লাসে মনোযোগী হবার ৮টি সহজ উপায়!

ক্লাসে মনোযোগী হবার ৮টি সহজ উপায়!
  •  সরিয়ে ফেলো মনোযোগ নষ্টের হাতিয়ার:

আমাদের ক্লাসে মনোযোগী হবার অন্যতম ভালো মাধ্যম হল, যে জিনিসগুলো আমাদের মনোযোগকে ক্লাসের দিক থেকে সরিয়ে তার দিকে মনোযোগী হবার জন্য আর্কষণ করছে সেগুলোকেই দূরে সরিয়ে ফেলা। মানে হলো মোবাইল, গেইম প্যাড-এগুলো এখন আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় হলেও ক্লাসের সময় এগুলোকে দূরে রাখতেই হবে। একটা বিষয় সবসময়ই মাথায় রাখতে হবে, ক্লাসে তুমি অমনোযোগী হয়ে পড়ছো, এটা বোঝার সাথে সাথেই খেয়াল করবে তুমি তাহলে কোথায় মনোযোগ দিচ্ছো? যা করছো তা না করে পুনরায় ক্লাসে মনোযোগ দাও।
এটা তো গেলো ক্লাসে কোন জিনিসগুলো তোমার মনোযোগ নষ্ট করছে। এছাড়াও যে সহপাঠীরা ক্লাসে সবসময় কথা বলছে, অমনোযোগী থাকছে, তাদের সাথে না বসে অন্য কোথাও বসো। এই অভ্যাসগুলো ক্লাসে মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
  •  সময়ের দিকে মনোযোগী হও:

ক্লাসে মনোযোগী হওয়ার অন্যতম আরেকটি উপায় হলো বর্তমান সময়ের দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া। অর্থাৎ, যে সময়ে তোমার ক্লাস চলছে সে সময়টুকুতে অন্য কিছু নিয়ে না ভাবা। ক্লাসের পর কই যাবে, আজকে কী টিফিন দিবে,বা সন্ধ্যায় কখন খেলতে যাবে, এরকম কোন কিছু নিয়ে না ভেবে, যে ক্লাসটি চলছে তার দিকে মনোনিবেশ করো। কোন দিবাস্বপ্ন নয়, যা হচ্ছে তার দিকে মনোযোগ দাও, এই অভ্যাসটি গড়ে তোলা কঠিন কিন্তু বারবার চেষ্টায় একবার এই অভ্যাসটি আয়ত্তে এসে গেলে তোমার জন্য অনেক বেশি উপকার হবে।
তোমাকে নিজে নিজেই শিখতে হবে কীভাবে তোমার ভাবনাগুলোকে আবদ্ধ রাখবে আর ক্লাসের লেকচারগুলোতে মনোযোগ দেবে। যদি অমনোযোগী হয়ে যাও, তাহলে ভাবনাগুলোকে ধরে ফেলো, নিজে নিজেও ভাবো ক্লাসে মনোযোগ দিতেই হবে। তারপর আবার মনোনিবেশ করো। আয়ত্তে আনা একটু কষ্টকর হলেও বারবার চেষ্টা তোমাকে সফল করবেই।
  •  কথা বলো শিক্ষকের সাথে:

প্রত্যকের কোন কিছু শেখার ধরণ ভিন্ন। হয়তো তোমার শিক্ষক যেভাবে বোঝাচ্ছেন বা শেখাচ্ছেন তোমার সেটা বুঝতে সমস্যা হচ্ছে, সে বিষয় নিয়ে শিক্ষকের সাথে কথা বলো। এছাড়া ক্লাসের পড়ার বিষয় নিয়ে পরের দিন এসাইনমেন্ট করতে পারো, এরপর যেকোন সমস্যা নিয়ে শিক্ষককে বলতে পারো। তুমি যদি নিজের পড়ার প্রতি বেশি মনোযোগী হতে পারো তাহলে সে বিষয়ে কোন সমস্যা অনুভূত হলে শিক্ষকের কাছে সহায়তাও পাবে নিজের মনের মতো।
শিক্ষকদের সাথে পড়াশোনার বিষয় নিয়ে নিয়মিত যোগাযোগের ব্যাপারটি ক্লাসের প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক। কারণ যখন শিক্ষকদের সাথে তোমার নিয়মিত যোগাযোগ থাকবে ওই বিষয়গুলোর প্রতি তোমার আলাদা আগ্রহ সৃষ্টি হবে। এতে করে ওই বিষয়গুলোর প্রতি মনোযোগ বাড়বে।
  •  ক্লাসের আগের প্রস্তুতি:

মনোযোগের মতো বিষয়টি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রস্তুতি নিয়েই আয়ত্তে আনতে হয়। ক্লাস শুরুর আগেই বিগত ক্লাসে কী পড়ানো হয়েছিলো সেগুলো দেখতে পারো, হোমওয়ার্কে চোখ বুলিয়ে নিতে পারো অথবা যে বিষয়ের ক্লাস সেই বিষয়ের বইটা একটু ঘেঁটে দেখতে পারো। ক্লাস শুরুর আগেই নিজের একটা মানসিক প্রস্তুতি তোমাকে অধিক মনোযোগী হতে সহায়তা করবে। এছাড়াও খাতা বের করা, পেন্সিলটা শার্প করা এসব কাজ একটা পরিবেশ তৈরি করে, যা থেকে তুমি নিজে থেকে মানসিক ভাবে তৈরি হতে পারো মনোযোগের সাথে ক্লাস করার জন্য।
  •  বসার স্থান পরিবর্তন:

ক্লাসে গিয়ে কই বসবো, এই নিয়ে প্রায়ই আমরা বিপাকে পড়ে যাই। কিন্তু তোমার নিয়মিত বসার স্থান পরিবর্তন করে সামনের বেঞ্চে এসে বসতে পারো। এতে করে তোমার মন এবং মস্তিষ্ক সবসময় সতর্ক থাকছে যে শিক্ষক তোমাকে দেখছেন, এই সর্তকতা তোমার মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
বার বার যখন মস্তিষ্ক একই সংকেত পাবে, ধীরে ধীরে তখন কিন্তু তা অভ্যাসে পরিণত হবে। এছাড়া যখন তুমি বন্ধুদের থেকে ক্লাস এর সময়ে দূরে বসছো, চাইলেও তাদের সাথে কথা বলার সুযোগটি আর থাকছে না। আর এই অনুশীলন তোমার ক্লাসে মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়ক হবে।
  •  নোট তৈরি করা:

শিক্ষক ক্লাসে যা পড়াচ্ছেন তা যদি তুমি খাতায় নোট করে নিতে পারো তাহলে ক্লাসে মনোযোগী থাকার বিষয়টি তোমার জন্য অনেক বেশি সহজ হয়ে যাবে। কারণ শিক্ষকের পড়ানোর সব বিষয় আর তোমার খাতায় লিখে রাখার বিষয়বস্তু যখন একই হচ্ছে তখন তোমার মস্তিষ্ক শিখছে এবং সেই বিষয়গুলিতে মনোযোগ দেবার চেষ্টা করছে। এছাড়া ক্লাসে নোট করার অভ্যাসটি তোমাকে বাসায় গিয়ে পড়া মুখস্থ এবং একইসাথে মনে রাখার জন্য অনেক বেশি সাহায্য করবে। আর তাই ক্লাস নোট করা অভ্যাসটি এখনি আয়ত্তে নিয়ে আসো।
  •  গবেষণা এবং অনুসন্ধান:

ব্যাপারটি খুবই স্বাভাবিক যে ক্লাসে পড়ানো সব বিষয় তুমি ভালোভাবে বুঝতে পারবে না। এতে করে হতাশ হয়ে যাওয়ার কিছু নেই। বাসায় এসে ক্লাসে পড়ানো বিষয়গুলি যদি ভালোভাবে গবেষণা করতে পারো তাহলে তুমি নিজেই অনেক কিছু বুঝতে পারবে। এক্ষেত্রে 10 Minute School হতে পারে তোমার গবেষণা এবং অনুসন্ধানের খুব ভালো একটি মাধ্যম। আর তাই যে বিষয়গুলো বুঝতে পারোনি সেগুলো অনলাইনে খুঁজে দেখতে পারো। এতে করে অনেক অজানা তথ্য, বিষয়ের প্রতি তোমার মনোযোগ বেড়ে যাবে।
  •  রুটিন তৈরি করো:

মনোযোগী না হওয়ার অভ্যাসটি অন্যান্য খারাপ অভ্যাসের মতই। আর তুমি যখন অনুধাবন করতে পারবে যে তুমি ঠিকমতো ক্লাসে মনোযোগ দিতে পারছো না, তখন থেকেই সবকিছুর জন্য একটি রুটিন তৈরি করবে। সেই রুটিন মোতাবেক পড়াশুনা করবে এবং ক্লাসের পড়াগুলো তৈরি করে ফেলবে।
একইসাথে সেই রুটিনে খেলাধুলা বা অন্য যে কাজগুলো করে তুমি আনন্দ পাও সেজন্য কিছু সময় বরাদ্দ করে রাখবে। রুটিন তৈরি করার উদ্দেশ্য হলো মস্তিষ্ককে একটি অভ্যাসের মধ্যে নিয়ে আসা, যখন তুমি ক্লাস করছো তখন যেন পুরো মনোযোগ ক্লাসে দিতে পারো; একই সাথে যখন খেলাধুলা করছো তখন যেন পুরো মনোযোগ খেলার মধ্যেই থাকে।

About Shohel Shikder

Check Also

The 3 type of digital marketing. ৩ ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং

The 3 type of digital marketing. ৩ ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং

  Marketing Myopia / মার্কেটিং মায়োপিয়া আবার অনেকেই জানেন আবার অনেকেই জানেন না বিষয় টা।। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *