জাপানে “সি_অফ_ট্রি” নামে একটি বন আছে। যেখানে কিছুদূর হাঁটলেই দেখতে পাবেন গাছ গুলোর ডালে মানুষের কঙ্কাল ঝুলছে!
প্রতি বছর এখানে প্রচুর মানুষ সুইসাইড করতে আসে! কেউ কেউ অনেক দূর দেশ থেকে টাকা খরচ করে মরতে আসে! মানুষ নিরিবিলিতে মারা যেতে পছন্দ করে।
মৃত্যুর জন্য এই জায়গাটি বেছে নেয় জানেন? যেন কেউ কখনো খুঁজে না পায়…
মানুষ বড় অভিমানী প্রাণী… মনোবিজ্ঞানীরা এখন বলছে প্রতিটি সুইসাইডের রক্তে তিনটি element মিশে থাকে…
#অভিমান
#হতাশা
#আত্মবিশ্বাসের অভাব
পুলিশ সদর দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর সুইসাইড করছে প্রায় দশ হাজার! অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন ২৭ জন!
এই টুকু একটা দেশে প্রতি ঘণ্টায় ১ জনের বেশি সুইসাইড করছে !!!
এত অভিমানী মানুষ ?…. ..এই ব্যাপার গুলো কেন ঘটে ? মানুষ সাধারণত একটি বিশেষ ঘটনায় সুইসাইড করে না। এই রোগটি সে তার ভেতরে অনেক দিন থেকে লালন করে।
মানুষের অনুভূতি অনেক বেশি….
আত্মহত্যা মানে আত্মাকে হত্যা: মৃত্যুর পরেও যার মানসিক – শারীরিক – আত্মীক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলবেনা এতটুকুন।
এসব জেনেও কেনো মরার আগেই মরে যেতে চান? আসুন তবে সুইসাইডের আগে জেনে নেই আত্মহত্যার কিছু লং টার্ম সুবিধা(!) অসুবিধা।
আচ্ছা বলুনতো?
মানুষ কেনো আত্মহত্যা করে?
মোটাদাগে পত্র-পত্রিকা ও আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া আত্মহত্যাগুলো বিশ্লেষন করলে আমরা দেখতে পাই:
✓ মানসিক রোগ
✓ প্রেমে ব্যার্থতা / ছেকা খাওয়া
✓ প্রিয়জনদের সাথে অভিমান
✓ দুশ্চিন্তা – অভাব – পেরেশানি
✓ অভিভাবকের ধমকি ও কটুক্তি
✓ অপরাধজনিত সামাজিক লজ্জা
✓ মানসিক – শারিরিক আঘাত
✓ শারীরিক অসুস্থতা – রোগ যন্ত্রণা
✓ দন্ডবিধি থেকে মুক্তি
✓ এছাড়াও জুয়া – নেশা – সম্পদের লোভ ইত্যাদি সহ নানা কারন থাকতে পারে।
আত্মহত্যা করলে কি লাভ?
এই যেমন ধরুন: ফ্রিল্যান্সার শামীম নামের ছেলেটি গলায় রশি বেধে মরেই গেলো তাতে কার কি লাভ হয়েছে?
ঈশিতা নামের যে মেয়েটি তার বিয়ে করা বউ ছিলো। আর্থিক দূরবস্থায় তাকে ডিভোর্স দিয়ে চলে গেছে।
যে বাবা মা, শ্বশুড় শ্বাশুড়ি আত্মীয় স্বজন তাকে বিপদের দিনগুলোতে পাশে থেকে সান্তনা দেয়নি, সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি, ঠাট্টা তামাশা করেছে, দূরে ঠেলে দিয়েছে। তাদের কারো কি কিছু এসে যাবে?
ঈশিতা তো দিব্যি আরেকজনের সাথে ঘর সংসার করবে।
আত্মহত্যার মাধ্যমে আপনি যে ভুলটা করলেন তার খেসারত দিতে প্রস্তুত আছেনতো প্রিয় ভাই?
যে জীনবটা মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের না চাইতেই ভিক্ষা দিয়েছেন তিনি দুনিয়ার জীবনে নানাবিধ লোভ, কস্ট, দুঃখ, জড়া, ঘাত প্রতিঘাত দিয়েই আমাদের যাচাই করেন বিপদে কিংবা সুখে কে তার অনুগ্রহ, দয়া আর ক্ষমার অনুকম্পা চায়; কে তার আদেশ নিষেধ মেনে চলে; একমাত্র তারই কাছে প্রত্যাবর্তনের নেশায় দুনিয়ার জীবনে নানাবিধ কঠিন পরীক্ষায় কৃতকার্যতার সাথে উত্তরনের সাহস দেখায়।
সেখানে ভীতু, কাপুরুষের মতো সামান্য দুনিয়াবি ব্যার্থতায় নিজের জীবনকে শেষ করে দেয়ার মাধ্যমে আপনি ধরেই নিয়েছেন সব কস্ট, অভিমান, ঘাত, শংকা থেকে মুক্তি পেয়ে গেলেন?
আত্মহত্যাকারীদের ব্যাপারে পবিত্র কোরআনুল কারীম কি বলেছে জানেন?
✓ هُوَ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
‘হে বান্দাহ! তোমাকে যিনি (না চাইতেই) জীবন দিয়েছেন; মৃত্যুও (তিনিই) দান করেন আবার মৃত্যুর (এমনকি আত্মহত্যার) পরেও তাঁরই কাছে তোমাকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। ___সূরা ইউনুস: ৫৬
অন্য আয়াতে দুনিয়া ও আখিরাতের মালিক বলেন,
✓ وَلاَ تَقْتُلُواْ أَنفُسَكُمْ إِنَّ اللّهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيمًا
‘আর তোমরা নিজেদের হত্যা করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি অত্যন্ত দয়াপরাবশ।
✓ وَمَن يَفْعَلْ ذَلِكَ عُدْوَانًا وَظُلْمًا فَسَوْفَ نُصْلِيهِ نَارًا
‘আর যে ব্যাক্তি (নিজের প্রতি) জুলুম করে, অন্যায়ভাবে আত্মহত্যা করবে, অবশ্যই আমি তাকে (সীমালংঘনের অপরাধে মারাত্মক শাস্তি দেবো) অগ্নিদগ্ধ করবো।’ ____সূরা আন-নিসা, ২৯-৩০
✓ বোখারি শরীফের ১৩৬৫ নং হাদীসে এসেছে: আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিতঃ ‘যে ব্যাক্তি গলায় ফাস লাগিয়ে আত্মহত্যা করলো, সে শাস্তি স্বরুপ জাহান্নামে আজীবন এভাবেই নিজের গলায় বারবার ফাস লাগাতেই থাকবে। এটাই তার অনাদিকালের শাস্তি।’
প্রিয় বন্ধু,
নিজের কাছে নিজেই পরাজিত হতে চান? বারবার? আজীবন? মৃত্যুর পরেও?
যে আল্লাহ সোবহানাহু ওয়া তায়ালা আপনাকে জীবন দিয়েছেন স্বীয় অনুগ্রহে তার ক্ষমতায় ভাগ বসাতে চান?
প্রতিটি মানুষ একজন লেখক…একজন গায়ক… একজন কবি… একজন নেতা…
এই পৃথিবীতে আপনার উপস্থিতি অনেক বেশি প্রয়োজন। অভিমান করে চলে যাবার জন্য আপনার জন্ম হয় নি।